SSC Biology chapter 3

SSC Biology chapter 3

কোষ বিভাজন নোট


কোষ বিভাজন

কোষ বিভাজনের মাধ্যমে জীবজগতে জীবদের দৈহিক বৃদ্ধি ও সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে। পূর্ববর্তী কোষের বিভাজনের মাধ্যমে নতুন কোষ সৃষ্টি হয়। 

জীবজগতের মধ্যে তিন ভাবে কোষ বিভাজন সম্পন্ন হয় -

১/ অ্যামাইটোসিস 

২/ মাইটোসিস 

৩/  মিয়োসিস 


মাতৃকোষ : 

কোষ বিভাজনের সময় যে কোষটি বিভাজিত হয় তাকে মাতৃকোষ বলে। 


অপত্য কোষ : 

কোষ বিভাজনের সময় মাতৃকোষ বিভাজিত হয়ে যে নতুন কোষগুলো উৎপন্ন হয়, সেগুলোকে অপত্য কোষ বলে।


অ্যামাইটোসিস 

যে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি মাতৃকোষ সরাসরি বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য কোষে পরিণত হয়, তাকে অ্যামাইটোসিস বলে 

আদিকোষ অ্যামাইটোসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়


মাইটোসিস 

যে পরোক্ষ কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি মাতৃকোষ বিভাজিত হয়ে দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয় এবং অপত্য কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃ কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার সমান থাকে, তাকে মাইটোসিস বলে 

সকল প্রকৃতকোষী জীবের দৈহিক বৃদ্ধি ঘটে মাইটোসিসের মাধ্যমে 


মাইটোসিসের পর্যায় সমূহ 


ক্যারিওকাইনেসিস

 কোষের নিউক্লিয়াসের বিভাজন কে বলা হয় ক্যারিওকাইনেসিস 


সাইটোকাইনেসিস : 

কোষের সাইটোপ্লাজম এর বিভাজন কে বলা হয় সাইটোকাইনেসিস 


ইন্টারফেজ : 

কোষ বিভাজনের পূর্বে কোষের প্রস্তুতিমূলক পর্যায়কে ইন্টারফেজ বল


প্রোফেজ 

১) কোষের নিউক্লিয়াস আকারে বড় হয় 

২) ক্রোমোজোম থেকে পানি হ্রাস পেতে থাকে, অর্থাৎ পানি কমতে থাকে। 

৩) ক্রোমোজোম গুলো আস্তে আস্তে সংকুচিত হয়ে খাটো ও মোটা হতে শুরু করে 

৪) এই পর্যায়ে প্রতিটি ক্রোমোজোম সেন্ট্রোমিয়ার ব্যতীত লম্বালম্বিভাবে বিভক্ত হয়ে দুটি ক্রোমাটিড উৎপন্ন করে 

৫) ক্রোমোজোমগুলো কুণ্ডলিত অবস্থায় থাকায় এদের সংখ্যা গণনা করা যায় না


প্রো-মেটাফেজ 

১) এই পর্যায়ের প্রথমদিকে উদ্ভিদ কোষে কতগুলো তন্তুময় প্রোটিনের সমন্বয়ে দুই মেরু বিশিষ্ট স্পিন্ডল যন্ত্র সৃষ্টি হয়। স্পিন্ডল যন্ত্রের তন্তুগুলো একমেরু থেকে অপর মেরু পর্যন্ত বিস্তৃত, এদেরকে স্পিন্ডল তন্তু বলা হয়।

২) এই পর্যায়ে ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার স্পিন্ডল যন্ত্র এর কিছু নির্দিষ্ট তন্তুর সাথে সংযুক্ত হয়, এই তন্তুগুলোকে আকর্ষন তন্তু বা ক্রোমোজোমাল তন্তু বলা হয়।

৩) ক্রোমোজোম গুলোকে সময়ে বিষুবীয় অঞ্চলে বিন্যস্ত হতে থাকে। 

৪) প্রাণী কোষে স্পিন্ডল যন্ত্র সৃষ্টিছাড়াও পূর্বে বিভক্ত সেন্ট্রিওল দুটি দুই মেরুতে অবস্থান করে।

৫) সেন্ট্রিওল দুটির চারদিক থেকে রশ্মি বিচ্ছুরিত হয়, এদেরকে এস্টার রে বলে।


মেটাফেজ 

১) এই পর্যায়ের প্রথমেই সব ক্রোমোজোম স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চলে অর্থাৎ দুই মেরুর মাঝখানে অবস্থান করে 

২) প্রতিটি ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার বিষুবীয় অঞ্চলে এবং বাহু দুটি মেরুমুখী হয়ে অবস্থান করে।

৩) এই পর্যায়ে ক্রোমোজোমগুলো সর্বাধিক খাটো ও মোটা হয়।

৪) প্রতিটি ক্রোমোজোমের ক্রোমাটিড দুটির মধ্যে আকর্ষণ কমে যায় এবং বিকর্ষণ শুরু হয়। 

৫) এই পর্যায়ের শেষদিকে সেন্ট্রোমিয়ারের বিভাজন শুরু হয়।

৬) নিউক্লিয়ার মেমব্রেন এবং নিউক্লিওলাস এর সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটে।


অ্যানাফেজ 

১) প্রতিটি ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়, ফলে ক্রোমাটিড দুটি আলাদা হয়ে পড়ে।

২) এই অবস্থায় প্রতিটি ক্রোমাটিডকে অপত্য ক্রোমোজোম বলে।

৩) অপত্য ক্রোমোজোম গুলি বিশ্বপ্রিয় অঞ্চল থেকে পরস্পর বিপরীত মেরুর দিকে সরে যেতে থাকে। অর্থাৎ অর্ধেক ক্রোমোজোম এক মেরুর দিকে এবং বাকি অর্ধেক অন্য মেরুর দিকে অগ্রসর হতে থাকে।

৪) অপত্য ক্রোমোজোমের মেরু অভিমুখী চলনে সেন্ট্রোমিয়ার অগ্রগামী থাকে এবং বাহুদ্বয় অনুগামী হয়।

৫) সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান অনুযায়ী ক্রোমোজোম গুলো V, L, J বা I এর মতো আকার ধারণ করে। 

৬) এই পর্যায়ের শেষের দিকে অপত্য ক্রোমোজোম গুলো স্পিন্ডল যন্ত্রের মেরুপ্রান্তে অবস্থান নেয়।


টেলোফেজ 

১) এই ধাপে প্রোফেজের ঘটনাগুলো পর্যায়ক্রমে বিপরীতভাবে ঘটে।

২) ক্রোমোজোম গুলোতে পানি যোজন ঘটতে থাকে। 

৩) ক্রোমোজোম গুলো শুরু ও লম্বা আকার ধারণ করে। অবশেষে এরা জড়িয়ে গিয়ে নিউক্লিয়ার রেটিকুলাম গঠন করে। 

৪) নিউক্লিওলাসের পুনরাবির্ভাব ঘটে। 

৫) নিউক্লিয়ার রেটিকুলামকে ঘিরে পুনরায় নিউক্লিয়ার মেমব্রেন এর সৃষ্টি হয়, ফলে দুই মেরুতে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াস গঠিত হয়। 

৬) স্পিন্ডল যন্ত্রের কাঠামো ভেঙে পড়ে এবং তন্তুগুলো ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যায়। 


মাইটোসিসের গুরুত্ব 

১) মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজনের কারণে প্রতিটি কোষের নিউক্লিয়াস এবং সাইটোপ্লাজম এর মধ্যকার আয়তন ও পরিমাণগত ভারসাম্য বজায় থাকে।

২) মাইটোসিস এর ফলে বহুকোষী জীবের দৈহিক বৃদ্ধি ঘটে। সব বহুকোষী জীব‌ই জাইগোট নামক একটি কোষ থেকে জীবন শুরু করে। এই একটি কোষ‌ই বারবার মাইটোসিস বিভাজনের ফলে অসংখ্য কোষ সৃষ্টির মাধ্যমে পূর্ণ জিবি পরিণত হয়।

৩) মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় তৈরি অপত্য কোষে ক্রোমোজোমের সংখ্যা ও গুনাগুণ একই রকম থাকায় জীবের দেহের বৃদ্ধি সুশৃংখলভাবে হতে পারে।

৪) মাইটোসিস এর ফলে অঙ্গজ প্রজনন সাধিত হয়।

৫) জনন কোষের সংখ্যা বৃদ্ধিতে মাইটোসিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

৬) ক্ষতস্থানে নতুন কোষ সৃষ্টির মাধ্যমে জীব দেহের ক্ষতস্থান পূরণ করতে মাইটোসিস অপরিহার্য।

৭) কিছু কিছু জীব কোষ আছে যাদের আয়ুষ্কাল নির্দিষ্ট এসব কোষ বিনষ্ট হলে মাইটোসিস এর মাধ্যমে এদের পূরন ঘটে।

৮) মাইটোসিস এর ফলে একই ধরনের কোষের উৎপত্তি হওয়ায় জীবজগতের গুণগত বৈশিষ্ট্যের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

৯) অনিয়ন্ত্রিত মাইটোসিস টিউমার এমনকি ক্যান্সার সৃষ্টির কারণ হতে পারে। 


মিয়োসিস 

যে পরোক্ষ কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি মাতৃকোষ বিভাজিত হয় চারটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয় এবং অপত্য কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম জনসংখ্যার অর্ধেক হয়, তাকে মিয়োসিস বলে।

মিয়োসিস এর মাধ্যমে - 

 জননাঙ্গে জনন মাতৃকোষ থেকে জনন কোষ উৎপন্ন হয় 

স্পোরাঞ্জিয়ামে স্পোর মাতৃকোষ থেকে স্পোর উৎপন্ন হয় 


উদ্ভিদে মিয়োসিস হয় পরাগধানী ও ডিম্বকে 

পরাগধানীর পরাগথলিতে ডিপ্লয়েড পরাগ মাতৃকোষ মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে হ্যাপ্লয়েড পরাগরেণু উৎপন্ন হয় 

ডিম্বকের ভিতর ডিপ্লয়েড স্ত্রীরেনু মাতৃকোষ মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে হ্যাপ্লয়েড স্ত্রীরেনু উৎপন্ন হয় 


প্রাণীদেহে মিয়োসিস  হয় পুরুষের শুক্রাশয়ে এবং মহিলাদের ডিম্বাশয়ে 

শুক্রাশয়ে ডিপ্লয়েড শুক্রাণু মাতৃকোষ মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে হ্যাপ্লয়েড শুক্রাণু উৎপন্ন হয় 

ডিম্বাশয়ে ডিপ্লয়েড ডিম্বাণু মাতৃকোষ মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে হ্যাপ্লয়েড ডিম্বাণু উৎপন্ন হয় 


মিয়োসিস না হলে কি সমস্যা হবে ? 

জীবের জননাঙ্গে জনন কোষ উৎপন্ন হয় মিয়োসিস প্রক্রিয়ায়। এর ফলে ডিপ্লয়েড জনন মাতৃকোষ থেকে হ্যাপ্লয়েড জনন কোষ উৎপন্ন হয়। এরপর হ্যাপ্লয়েড শুক্রাণু ও হ্যাপ্লয়েড ডিম্বাণু মিলিত হয়ে ডিপ্লয়েড জাইগোট সৃষ্টি হয়। সেই জাইগোট মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে জীব দেহ সৃষ্টি হয়। এইভাবে সকল প্রজাতির জীবের ক্রোমোজোম সংখ্যা স্থির থাকে। 

      কিন্তু মিয়োসিস না হলে জনন অঙ্গে জনন কোষ উৎপন্ন হবে মাইটোসিস প্রক্রিয়ায়। তখন জননকোষ শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু উভয়ই হবে ডিপ্লয়েড। তখন দেহকোষের মত জনন কোষের মধ্যেও ২ সেট করে ক্রোমোজোম থাকবে। এই শুক্রাণু ও ডিম্বাণু যখন মিলিত হবে তখন জাইগোটের মধ্যে ক্রোমোজোম তৈরি হবে ৪ সেট। অর্থাৎ উৎপন্ন জীবদেহে ক্রোমোজোম সংখ্যা পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণ হয়ে যাবে। 

    এরপর এই নতুন জীবে যখন জনন কোষ তৈরি হবে তখন শুক্রাণুর মধ্যে ক্রোমোজোম থাকবে ৪ সেট, ডিম্বাণুর মধ্যেও ক্রোমোজোম থাকবে ৪ সেট। এই শুক্রাণু ডিম্বাণুর মিলনে যে জীব তৈরি হবে সেই জীবে ক্রোমোজোম থাকবে ৮ সেট । অর্থাৎ এইভাবে প্রত্যেক প্রজন্মে ক্রোমোজোমের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। 


কোষ বিভাজন সম্পর্কে ভালো ধারনা পাওয়ার জন্য এই ভিডিও - 



Chapter 4 Notes



আরও জানার জন্য -

YouTube :
Biology Helpline
 
Face Book :  Biology Helpline

Website:  Biology Helpline

 

স্বাস্থ্য সুরক্ষায়

 
 
Facebook :  Classical Homeo Hall
#biologyhelpline

cell division definition, cell division mitosis, cell division stages, cell division of fungi, cell division types, cell division of plantae, cell division in plants,